IELTS কি? কেন এবং কিভাবে ?
IELTS (ইন্টারন্যাশনাল ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ টেস্টিং সিস্টেম) হল একটি আন্তর্জাতিক মানের ইংরেজি ভাষার দক্ষতা মূল্যায়ন পরীক্ষা।এটি বিশ্বের ১৪০টিরও বেশি দেশে গ্রহণযোগ্য পেয়েছে , বিশেষ করে ইংরেজি ভাষাভাষী দেশগুলোতে (যেমন যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, নিউজিল্যান্ড, এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) উচ্চশিক্ষা, পেশাগত কার্যক্রম অথবা অভিবাসন উদ্দেশ্যে আবেদন করার জন্য ব্যবহার করা হয়।
IELTS মূলত দুটি ধরণে অনুষ্ঠিত হয়:
- Academic IELTS – যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চান, তাদের জন্য।
- General Training IELTS – যারা কর্মসংস্থান বা অভিবাসন করতে চান, তাদের জন্য।
IELTS পরীক্ষার চারটি অংশ থাকে:
- Listening (৩০ মিনিট): এটি মূলত আপনার শোনার ক্ষমতা যাচাই করার টেস্ট।আপনার সামনে একটি প্রশ্নপত্র রাখা হবে এবং একটি প্যাসেজ ইংরেজিতে বাজিয়ে (অডিও) শুনানো হবে।অডিও শুনে তার ভিত্তিতে কোশ্চেনের আনসার দিতে হবে। অডিও শুধুমাত্র একবার বাজানো হবে, একবারই মন দিয়ে শুনতে হবে।
- Reading (৬০ মিনিট):এটি মূলত প্যাসেজ পড়ে বুঝার ক্ষমতা যাচাই করা হয়ে থাকে।তিনটি বিভাগে 40 টি প্রশ্ন থাকবে এবং প্রতিটির মান 1 ধরা হবে।প্যাসেজ থেকে বাক্য পূরণ ,সংক্ষিপ্ত উত্তর ,সঠিক উত্তর খুঁজে বের করা ইত্যাদি থাকবে।
- Writing (৬০ মিনিট):এটি মূলত আপনার কোন বিষয়ের উপর কতখানি চিন্তা বা কল্পনা শক্তি খাটাতে পারেন তার পরীক্ষা নেওয়া হয়ে থাকে। রাইটিং এর দুইটি অংশ লিখতে হয়.১. Task 1-এ গ্রাফ বা চার্ট দেখে রিপোর্ট লিখতে হয়।২. Task 2-এ একটি সমস্যা বা বিতর্ক নিয়ে মতামত দিয়ে রচনা লিখতে হয়।
- Speaking (১১–১৪ মিনিট):এই টেস্টের জন্য নির্দিষ্ট একটি দিনে পরীক্ষা স্থলে যেতে হয়। দুই-তিনজন পরীক্ষক থাকে যারা ইংরেজিতে কোশ্চেন করে।সামনাসামনি ইংরেজি ভাষায় কথা বলে নিজেকে ব্যক্তিগত বা পেশাগতভাবে উপস্থাপন করতে হয়।
For an Inquiry about IELTS: (880) 1930-350350
IELTS ব্যান্ড স্কোর
IELTS যে নাম্বার দেওয়া হয় তাকে ব্যান্ড স্কোর বলে। IELTS স্কোর ০ থেকে ৯ এর মধ্যে দেওয়া হয়।
লিসেনিং এবং রিডিং পার্টের স্কোরিং পদ্ধতি দেওয়া হলো:
- প্রশ্ন সংখ্যা: ৪০ টি প্রশ্ন।
- প্রত্যেক সঠিক উত্তরের জন্য: ১ মার্ক।
- সর্বমোট সঠিক উত্তর: ৪০ মার্ক।
- ব্যান্ড স্কোরে রূপান্তর: সঠিক উত্তর সংখ্যা অনুযায়ী ১ থেকে ৯ ব্যান্ড স্কেলে রূপান্তরিত হয়।
- Academic ও General Training: উভয় মডিউলেই ৪০ টি প্রশ্ন থাকে।
সঠিক উত্তরের সংখ্যা | ব্যান্ড স্কোর |
0-6 | 1 |
7-9 | 2 |
10-12 | 3 |
13-15 | 4 |
16-18 | 5 |
19-22 | 6 |
23-25 | 7 |
26-28 | 8 |
29-30 | 9 |
রাইটিং (Writing) স্কোরিং পদ্ধতি:
দুটি টাস্ক: টাস্ক ১ এবং টাস্ক ২।
- টাস্ক ১: গ্রাফ, টেবিল, চার্ট বা ডায়াগ্রাম বিশ্লেষণ করা।
- টাস্ক ২: একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে একটি প্রবন্ধ লেখা।
উদাহরণ:
- টাস্ক ১ স্কোর: ৭.৫
- টাস্ক ২ স্কোর: ৬.৫
- সামগ্রিক রাইটিং স্কোর: (৭.৫ + ৬.৫) / ২ = ৭.০
স্পিকিং (Speaking) স্কোরিং পদ্ধতি:
- ফ্লুয়েন্সি অ্যান্ড কনফারেন্সি
- লেক্সিকাল রিসোর্স
- গ্রাম্যাটিক্যাল রেঞ্জ অ্যান্ড অ্যাকুরেসি
- প্রোনানসিয়েশন
চারটি মানদণ্ডে মূল্যায়ন করে স্কোর দেওয়া হয়ে থাকে।
প্রতিটি মডিউলের ব্যান্ড স্কোর: লিসেনিং, রিডিং, রাইটিং, ও স্পিকিং-এর স্কোরের গড় হিসাব করা হয়।
উদাহরণ:
- লিসেনিং: ৭.০
- রিডিং: ৬.৫
- রাইটিং: ৭.০
- স্পিকিং: ৬.৫
- গড়: (৭.০ + ৬.৫ + ৭.০ + ৬.৫) / ৪ = ৬.৭৫
Ielts কি কি কাজে লাগে?
ইংরেজিতে আপনি কতটা দক্ষ তা যাচাই করার জন্য ielts এক্সাম দেওয়া হয়ে থাকে।IELTS বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত একটি ভাষা পরীক্ষা।তাই নিজের দক্ষতা যাচাই করতে বিশেষভাবে বিদেশে পড়াশোনা, কাজ অথবা অভিবাসন করার জন্য প্রয়োজনীয়। IELTS-এর প্রয়োজনীয়তা বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেখা যায়, এবং এটি বিভিন্ন কাজে ব্যবহার হয়:
- বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি:যখন আপনি ইংরেজি ভাষাভাষী দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চান,তখন এটি নিশ্চিত করে যে আপনি ইংরেজি ভাষায় ভালোভাবে যোগাযোগ করতে পারবেন।তখন বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত IELTS স্কোর অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য প্রধান যোগ্যতা হিসেবে কাজ করে।
- কর্মসংস্থান:বিশ্বের অনেক কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান তাদের চাকরির প্রার্থী বা কর্মীদের জন্য IELTS স্কোর চায়। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলো যেখানে ইংরেজি যোগাযোগের প্রয়োজন, তারা প্রার্থীকে ইংরেজিতে দক্ষতা যাচাই করার জন্য IELTS পরীক্ষা নেয়ার পরামর্শ দেয়।
- অভিবাসন বা স্থায়ী বসবাস:ইংরেজি ভাষাভাষী দেশগুলোতে বসবাসের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ভালোভাবে যোগাযোগ করার দক্ষতা থাকা। অনেক দেশ তাদের অভিবাসন প্রক্রিয়ার একটি অংশ হিসেবে IELTS পরীক্ষা নিয়ে থাকে।এই পরীক্ষা নেওয়ার মাধ্যমে এটি প্রমাণ করে যে আপনি সেই দেশে বসবাসের জন্য ইংরেজি ভাষায় সক্ষম। অভিবাসন স্কোর নির্ধারণে IELTS স্কোর একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
- ব্যক্তিগত উন্নয়ন:IELTS শুধু যে বাহিরের দেশে পড়াশোনা বা অধিবেশনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তা নয় নিজেকে ইংরেজিতে দক্ষ এবং আত্মবিশ্বাসী করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।আমাদের দেশেও ভালো ভার্সিটি গুলোতে বা ভালো চাকরির ক্ষেত্রে ইংরেজি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
IELTS শুধু একটি পরীক্ষা নয়; এটি আপনার শিক্ষা, কর্মজীবন, এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন পরিকল্পনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি উপকরণ।
IELTS q card
IELTS কিউ কার্ড হলো একটি ছোট্ট কার্ড যা ielts পরীক্ষায় স্পিকিং অংশের প্রার্থীদের দেওয়া হয়ে থাকে।টিতে একটি বিষয় বা প্রশ্ন রয়েছে যা প্রার্থীকে দুই মিনিটের জন্য বলতে হবে।এই দুই মিনিটের মধ্যে মনমুগ্ধকর ভাবে বক্তব্য উপস্থাপন করতে হয়। প্রার্থীর ভাষাগত দক্ষতা, চিন্তাশক্তি এবং আত্মবিশ্বাসের পরীক্ষা নেয়, যেখানে তিনি তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা, মতামত এবং যুক্তি প্রকাশের মাধ্যমে শ্রোতাদের মুগ্ধ করেন।
Ielts কিভাবে করতে হয়
IELTS (International English Language Testing System) পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য কিছু ধাপ অনুসরণ করা যেতে পারে। নিচের ধাপগুলো সম্পর্কে আলোচনা করা হলো:
- IELTS পরীক্ষার প্রকার নির্বাচন করুন:
- .Academic IELTS – যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চান, তাদের জন্য।
- General Training IELTS – যারা কর্মসংস্থান বা অভিবাসন করতে চান, তাদের জন্য।
- IELTS পরীক্ষার শিডিউল এবং রেজিস্ট্রেশন:
IELTS এর পরীক্ষার জন্য বিশ্বব্যাপী অনেক সেন্টার রয়েছে। যেমন:British Council, IDP, বা Cambridge
অনলাইনে নিবন্ধন করুন:IELTS পরীক্ষার জন্য অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। আপনি IELTS এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে আপনার নিকটস্থ পরীক্ষা কেন্দ্র এবং তারিখ পছন্দ করতে পারবেন।
- IELTS পরীক্ষা বিভাগসমূহ:IELTS পরীক্ষার চারটি অংশ থাকে:
1 . Listening (৩০ মিনিট): ইংরেজি ভাষায় বিভিন্ন আলোচনা ও কথোপকথন শুনে সঠিক উত্তর দিতে হয়।
2.Reading (৬০ মিনিট):ইংরেজি ভাষায় বিভিন্ন ধরণের টেক্সট পড়ে প্রশ্নের উত্তর দেওয়া।
3.Writing (৬০ মিনিট):রাইটিং এর দুইটি অংশ লিখতে হয়.১. Task 1-এ গ্রাফ বা চার্ট দেখে রিপোর্ট লিখতে হয়।২. Task 2-এ একটি সমস্যা বা বিতর্ক নিয়ে মতামত দিয়ে রচনা লিখতে হয়।
4.Speaking (১১–১৪ মিনিট):সামনাসামনি ইংরেজি ভাষায় কথা বলে নিজেকে ব্যক্তিগত বা পেশাগতভাবে উপস্থাপন করা।
- IELTS প্রস্তুতি: IELTS প্রস্তুতির জন্য আপনাদের কিছু স্টেপ ফলো করতে হবে।যেমন:
স্টেপ 1: ভালো ইন্টারনেট কানেকশন
আপনার ভালো ইন্টারনেট কানেকশন লাগবে কারণ IELTS এর জন্য যা কিছু দরকার তা সবকিছু আপনি ইন্টারনেটে পেয়ে যাবেন।
স্টেপ 2:বই কিনে নেওয়া
Ielts প্রস্তুতির জন্য সবচেয়ে বেস্ট হলো হলো ক্যামব্রিজের সবগুলো সেট কিনে ফেলা
স্টেপ 3:পড়া শুরু করা
বই কিনার পর একেবারে শুরু থেকে পড়া স্টার্ট করতে হবে।পড়ার সাথে সাথে নাম্বারিং সিস্টেম সম্পর্কে ভালোভাবে ধারণা নিতে হবে। কি ধরনের কোশ্চেন আসে সেই প্যাটার্ন সম্পর্কে ভালোভাবে ধারণা নিয়ে পড়তে হবে।
স্টেপ 4:স্ট্রং এবং উইক পয়েন্টগুলো আইডেন্টিফাই করা
আপনি কোন কোন পার্টে খুব ভালো করছেন কোন কোন পার্টে আপনার খারাপ করছেন সেগুলো আপনার আইডেন্টিফাই করতে হবে। দেখা যাচ্ছে চারটি পার্টের মধ্যে আপনি তিনটি ভালো করছেন একটি খারাপ করছেন। যে পার্টটা আপনি খারাপ করছেন সেই পার্টটাকে আপনার ইমপ্রুভ করতে হবে।
স্টেপ 5:প্র্যাকটিস
প্র্যাকটিসের কোনো বিকল্প নেই, আপনি বেশি বেশি করে প্র্যাকটিস করতে থাকবেন।
- পরীক্ষার দিন:পাসপোর্ট বা ID কার্ড নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে যেতে হবে,রীক্ষার সময় শুরু হওয়ার আগে ৩০ মিনিট আগে উপস্থিত হওয়া ভালো।
ফলাফল:সাধারণত ১৩ দিন পর ফলাফল প্রকাশিত হয়। এটি আপনি অনলাইনে বা আপনার রেজিস্ট্রেশন কেন্দ্র থেকে জানতে পারবেন।
স্কোর:IELTS স্কোর ১ থেকে ৯ এর মধ্যে হয়, এবং আপনি প্রতিটি বিভাগের জন্য আলাদা স্কোর পাবেন। আপনার মোট স্কোর সাধারণত এই ৪টি বিভাগের গড় হিসাব করা হয়।
Ielts কি খুব কঠিন?
হ্যাঁ ielts অবশ্যই একটি কঠিন পরীক্ষা । listening ,Reading,Writing and Speaking এই চারটি ফরমেটের মাধ্যমে ielts পরীক্ষা নেওয়া হয়ে থাকে । যেহেতু আমরা বাংলাদেশী স্টুডেন্টরা এই বিষয়গুলোর সাথে পরিচিত না তাই ielts এক্সাম আমাদের কঠিন মনে হয়।তাই সঠিক গাইডলাইন এবং কিছু রুলস, ট্রিকস, টিপস আমরা ফলো করলে আমাদের কাঙ্খিত ব্যান্ড স্কোর পেতে পারি । IELTS পরীক্ষা কোনোভাবেই অত্যন্ত কঠিন নয়, তবে এটি কিছুটা চ্যালেঞ্জিং হতে পারে যদি আপনি প্রস্তুতি না নেন। সঠিক প্রস্তুতি এবং নিয়মিত অনুশীলনের মাধ্যমে আপনি সফলভাবে পরীক্ষাটি পাস করতে পারবেন।